শারদীয়, ১৪২৯
Poems/কবিতা
মাটি
রাজর্ষি ঘোষ
ছিন্ন হয়েছে শিকড়
মাটি এখন অনেক গভীরে
রেললাইনের একপাশে ঘুপচির অন্দরমহল
জোনাক জ্বলে
কুপি জ্বলে আরো ধীর লয়ে
নিমীলিত চোখের পাতা
অদৃশ্য কোটরে মণিদুটি
রোপণ করেছে চারা
স্যাই আমাগো দ্যাশ
গেরস্থালি বয়ে গেছে উনুনের পদ্মানদী বেয়ে
চিক্চিক্ চিক্চিক্
দেশে ফিরবা না?
কোনদিন?
কোন দ্যাশ? উখানে তো মোদের কেউ নাই
বাহাত্তরে পালায়ে আসছিলাম
ঘর বাড়ি জ্বইলা গ্যাসে
আহা উঠানের লাউগাছ
মাচার উপর ডগা
লকলকে
কত লাউ ফলসিল জানস?
এখানেও লাউগাছে ফুল আসে – ফল আসে
টালির উপর টালি
জোড়াতালি
ছ্যাঁদাওলা জামার হাতায়
গোপন খুঁটের খবর
আনোয়ারের মেয়ে
সে পালিয়েছিল হিন্দু ঘরের ছেলের সাথে
পরে আনোয়ারই ওদের রিক্সা কিনে দেয়
সিটের উপর দিলীপকুমার
বৈজয়ন্তীমালা
ঝিকমিক রূপের চাবি
যদিও টেকে নি
দেবাঃ ন জানন্তি কুত মনুষ্য
রাজর্ষি ঘোষ
এই যে আলোকলতা মেলে দিয়েছে ডানা
এই যে সুবর্ণ চুল আধ খোঁপা বিরহের সন্ন্যাস পেখম এঁকেছে কাহিনী
এই যে না–বলা বা বলার মাঝামাঝি ওম
এখানেই কৃত সঙ্কল্পের আগে
মিছিলের পেছনে
হেঁটে গিয়েছেন আমার ঈশ্বর
বসন ছিল না পরিধান একমাত্র চাঁপা ফুল
কেতকী কোমল আননে আত্মানাং বিদ্ধি
চরৈবতি পথে কোন ভুখন্ডে আলো কোন জলাশয়ে জল
কোন গাছে পাখি বা কোন রঙ তুলিতে সাজাবে
আলোক বর্ষের উজ্জ্বল পথ
তা তো সহজিয়া নয়
আমি আগুন গুণি, ঈশ্বর তামাক সেজে দেন
আমি কান পাতি, তিনি গুনগুন গেয়ে ওঠেন লোক-সংগীত
কখনো করিম, কখনো নমশুদ্র
ঝাঁটা হাতে এসপ্ল্যানেডের মোড়ে
আবাহনী উচ্চারণে আটপৌরে রবীন্দ্রনাথ লিখে রেখেছেন
তারই চ্যালা চামুন্ডারা
সুতরাং মাভৈঃ মানে বৈতরণী
আমার বাঁশি এলোঝেলো রাজপথে ছাতা দিয়েছে তার ন্যাড়া মাথায়
আর উনি বৃষ্টি বগলে নিয়ে হাত উঁচিয়ে বলছেন তারস্বরে