দ্বিতীয় বর্ষ
Poems/কবিতা
আর ছবি নয়। দুটো ভাত দাও
শান্তনু বন্দোপাধ্যযয়
পঞ্চায়েতের বাবু টা বলল, লেখাপড়াটা তো
শিখিস নি কিছুই
ইস্কুলে গেছিস কখন
গুরুপদ বলল, প্রতি বছরইতো যাই বাবু ইস্কুলে।
প্রতি বছর কেন, পাস করিস না
আমাদের পাস করায়না বাবু
সেকী, কেন ?
আমরা হলুম যমের ও অরুচি। কত করে বলি,
আমাদের পাস করিয়ে দাও,আর এনো না ইস্কুলে কথাটা শোনে কোই। প্রতি
বছর বন্যাও হবে আর আমাদের ইস্কুলে পাঠাবে। বলি, এটাই যেন
শেষ বছর হয়।
এবার না হয় মেরে দাও
তোদের মেরে দিলে,ভোটটা দেবে কে
যা স্কুলে যা। ওখানেই থাক।
বড় কষ্টগো বাবু। মাছি, মশা, ধূলো, ঘুম নেই, খাওয়া নেই।
খাওয়া নেই। কী বলছিস।
আমি নিজে হাতে খাবার দিয়েছি
বাবু সকাল সাতটায় খিদে পেতো
ভাত আসতো সন্ধ্যা সাতটায়
আপনি খালি বলতেন
আর একটু ,এল বলে
ক্যামেরা বাবু।
বলতাম ছবি নয়,ভাত দাও।
বাচ্চারা কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়ত।
তাইতো বাবুদের বলি,
এবার পাস করিয়ে দাও।
মেরে দাও
তোদের মেরে দিলে, ভোটটা দেবে কে।
তাহলে আমার ঘরটা দাও
সে তো আম্ফানে ভেসে গেছে কবে
গুরুপদ বলল এটা কেমন বিচার হল।
ছোটবেলায় মা বাবা
ইস্কুলে পাঠাল না ,বড় হয়ে তোমরা ইস্কুলে পাঠালে মরতে ইচ্ছা হল,
প্রতি বছর বন্যা হলেই আমায় স্কুলে যেতে
হবে। কী কষ্ট।
কষ্ট কেন! তোর ঘরটা বানিয়ে দি।
ওটাতে বড্ড ভোটের
গন্ধ। আমি চাই আমার
ঘরেতে থাকবে আমার
ঘামের গন্ধ। পারবে দিতে
তাহলে আমায় কটা কঞ্চি আর হোগলা পাতা দাও,
সেটা তো আমি কিনব।
তোকে কী করে কিনতে দিই। ওটা অনেক টাকার
লেনদেনের গল্প। তুই বুঝবি না। তুই বরং ইস্কুলই যা।
এবার একটা লোক গুরুপদকে টানতে টানতে
ইস্কুলেরদিকে নিয়ে চলল।
গুরুপদ বলল আমায় মরতে দিব না
লোকটা বলল না
কেন?
পার্টির নাম খারাপ হবে।