অন্তর্দীপ্তি
Poems/কবিতা
অভিযোগ
অজন্তা সাহা
দুষ্মন্ত,তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।
আমার তপোবনের শান্ত জীবনে-
সহকার-মাধবীলতা-হরিণশিশু
আর প্রিয়সখীদের ভালোবাসায় সাজানো জীবনে
প্রেমের ঝটিকা বয়ে কেন তুমি এসেছিলে,
কেন আমার মৃত্তিকাতে বীজ ছড়িয়ে বিদায় নিলে আমায় শুধু প্রতীক্ষাতে মগ্ন রেখে,
আমার মুখের কথার চেয়ে,আমার ভালোবাসার চেয়েও নিষ্প্রাণ এক আংটি কেন দামী হল তোমার কাছে সেই অভিযোগ করবোনা আর ।
প্রজার দাবি মেনে অন্তঃসত্তা এই আমাকে কেন বনবাসে পাঠালে সেদিন,
তাও মিথ্যা ছলনায় ভুলিয়ে,
কেন উঠেছিল দাবি অগ্নিপরীক্ষার
সেই অভিযোগ তুলে বিব্রত করবেনা সীতা তোমাকে কখনো রঘুবীর।
পবিত্র অগ্নিকে সাক্ষী রেখে
পাশে থাকার অঙ্গীকারের পরেও
কেন উপহার দিলে চতুর্দশ নিঃসঙ্গ বসন্ত,
সে অভিযোগ কোনোদিন জানাবেনা উর্মিলা তোমাকে,রামানুজ।
দুষ্টের দমন,
শিষ্টের পালন,
ধর্মরাজ্যসংস্থাপন-
আরো কত শত মহান দায়িত্বের অবকাশে
একবারো ভাবলেনা কিভাবে বাঁচবে রাই?
তাহোক,তবুও নেই কোনো অভিযোগ।
আমাকে বাজী রাখা,
আমার বস্ত্রহরনে উদ্যত পশুদের দেখেও
নীরব থাকা -
ওসব কারনেও কোনো অভিযোগ নেই।
আসলে আমরা বুঝে গেছি,অভিযোগ অর্থহীন।
আসলে আমরা শিখে গেছি,এবং শিখছি সংগ্রামের
বীজমন্ত্র।
একা একা বাঁচতেও শিখে যাব ঠিক।
শুধু একবার ভেবে দেখো,
প্রেমহীন,পরিচর্যাহীন,
প্রিয়নারীসঙ্গহীন পৃথিবীতে
তুমি কি পারবে ভালো থাকতে,পুরুষ?