প্রথম বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা - বাঁচার অধিকার
Poems/কবিতা
গুচ্ছ কবিতা
পিনাকী রায়
বিরজা
উড়নচণ্ডী স্মৃতির ভীড়ে আলাদা করে
তোমায় দেখতে পাই, তুমি জানো না।
কুর্সিজয়ের ভুলের মতো এই স্মৃতি
সাদা জামা যেন, এখন পোক্ত বেদেনি
আমি পেয়েছিলাম মাটির তালের গন্ধ
বুঝিনি সময় উড়ে গেছে চড়ুই’এর পাখে
ভুলে ভালে হাওয়ায় নেমে গেছি আমি
ঠিক যেভাবে পাহাড়ে প্রেম নেমে যায়
শুকনো অথবা শীর্ণ জলের ধারায়।
দেখতে, শুনতে, বলতে লাগে ভালো
আর আমি প্রান্তে বসে বলি, মারো মারো।
তবুও উড়নচণ্ডী স্মৃতির ভেতর ঘুমঘোর
তোমার মুখ ও আকাশ-ছোঁয়া মই
যেন ডাকছে ভাঙা নৌকার ছই
যেন রক্ত চোঁয়ানো রোদ ঠা-ঠা
যেন হাতে হাত হয়ে যায় বরফ
যার লুকানো গোপন নাম—বিরজা।
এলাটিং বেলাটিং
নামটা আমি পাল্টে দিলাম
হোক না কেমন বোকাবোকা-- ভেলভেলেটা
কিন্তু আমার ভরসা আছে
জড়িয়ে আছে কিশোর সময়
এখনো যেন উলের মতো উষ্ণ হৃদয়
আজ ধার! ভালোবাসবে কালকে?
প্রীত টিয়া তাই পান বরজে
বসতে গেল কালকে।
ভেলভেলেটা বোকাবোকা
খেলতে পটু রুমাল চোর মধ্যরাতে
গভীরতায় দেখেছি তাকে
মধ্যে নীরব অবসর।
পানবরজে থাকে হাসি, অসময়ে?
ভেলভেলেটা বোকাবোকা
খেলতে পটু রুমাল চোর
এবার কিন্তু আপনি বলে নাম লিখেছি
রুমালচোরের নাম-- ভালোবাসি
ভুলতে পারি? কেন ভুলব?
স্বর্ণকাতান সময়গুলোর ঋণ গোধূলি।
এলাটিং বেলাটিং
এলাটিং বেলাটিং সই লো।
কদমতলা
আমাদের কদমতলায় হেরে গেছে কদমগাছ
ধানখুঁটে খাওয়া চড়ুই-এর নরমঘর
আলতা মাখালেও যাকে ছোঁয় মৃত্যুর বিষাক্ত ছোপ
নিরুদ্দেশ শব্দটি নিত্য সহচর।
এখানে লঘুসংখ্যার মানুষেরা হাঁটে কাঁচুমাচু
ভোলে ভালে হাওয়া-ও লিখছে কবির শ্মশান
হাসছে মহাকাল, এই রুরুপ্রান্তরে অদ্ভুত তাথৈ ছেনাল
আমাদের কদমতলায় হেরে গেছে কদমগাছ।
আমি কিন্তু বেঁচে আছি এই ছেনাল শব্দের মাঝখানে
বিসমিল্লার মিহিদানা সুর ও অতলে তোমার চোখ
অনন্তে কবিতার মায়াবী শব্দ ও অলৌকিক নরমত্বক
এসো, সবাই কদমগাছ লাগাই।
এসো, সবাই মহিনের ঘোড়াদের সঙ্গে মাথা ঝাঁকাই।
এই ছোট্ট বেঁচে থাকার নাম যে কদমতলা।