প্রথম বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা - শারদীয়া, ২০২০
Short Stories/ছোটগল্প
অনুগল্প
প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী পূজা
অবাঞ্ছিত লোকের অযাচিত প্রশ্নের সম্মুখীন হলে আমি গম্ভীর মুখে শুধু পালটা প্রশ্ন করি, ‘কেন?’ এবং এর যা অমোঘ ফল আমি পেয়েছি, সেটা চেষ্টা করেছি ছড়িয়ে দিতে, যাদের ছড়িয়েছি, তারাও খুব ভাল ফল পেয়েছে।
যেমন, কোথায় যাচ্ছ? – কেন?
এত রাত করে ফিরছ কোথা থেকে? – কেন?
এখানে কী করতে এসেছ? – কেন?
কাল তোমার সঙ্গে যাকে দেখলাম সে কে? – কেন?
বিয়ের বয়স হয়ে গেল, আর কবে বিয়ে করবে? – কেন?
আসলে প্রশ্নকর্তা শুধু কৌতুহলবশতঃ প্রশ্ন করেন না। এর পেছনে সূক্ষ্মভাবে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার মত মহান উদ্দেশ্যও থাকে। তাই সেই উদ্দেশ্যকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করতে কেন’র বিকল্প উত্তর পাইনি।
এই একই ‘কেন’ আবার কোন সম্পর্কের মাঝখানে ঢুকে গেলে সেই সম্পর্কের সুস্থতা বেশিদিন স্থায়ী হয়না।
এতক্ষণ ফোন এনগেজ ছিল ‘কেন?’
আমাকে বাদ দিয়ে ওখানে চলে গেলে ‘কেন?’
এটা পরলে ‘কেন?’
একা একা থেকে কীসের আনন্দ? নরম্যাল হতে পারোনা ‘কেন?’
আরো হাজার হাজার কেন’র ভারে নুয়ে পড়ে এক সময় সমস্ত কেন’কে ছুঁড়ে দিতে হয়। যারা পারে না, তারা মমি হয়ে যায়।
এই একই ‘কেন’ যখন স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত হয়ে উচ্চারিত হয়, তখন বিপ্লব ঘটে।
আমাদের অধিকারে থাকা সুযোগ সুবিধা আমরা পাব না কেন?
আমাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে কেন?
বাক স্বাধীনতা আমরা পাব না কেন?
যে মাহাত্ম্য নিয়ে একেকটা শব্দ আমাদের কাছে আসে, প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্নভাবে ব্যবহার করার কৌশল তো আসলে শিল্প। যারা পারে, তারাই শিল্পী।