Society, Language and Culture
সমাজ, ভাষা ও সংস্কৃতি

(A Multidisciplinary Peer-Reviewed Journal)
A Unit of Society, Language and Culture Trust
ISSN: 2583-0341

প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা - আগস্ট, ২০২০

Poems/কবিতা

অব-স্থান

শ্রীমন্তী চৌধুরী


এ এক অসুখ সময়
ড্রয়িংরুম ক্লাসরুম মন্দির বাজার
কারোর জন্য নয়
হাঁটা রাস্তা ট্রেন বাস নদী কিম্বা আকাশপথ
ফাঁকা রাখো, সরে দাঁড়াও, অন্য কোথাও যাও
গন্ডি বেঁধে বদ্ধ থাকো ঘরের কিনারায়
পদক্ষেপ আর পদধ্বনির সংজ্ঞাই মুছে যাক
ত্রিপাদ ভূমি আছে কিনা তাই করো সংশয়!
নদীর ধার, সমুদ্র তীর, পাহাড়ী স্টেশন, গ্রাম পিকনিক
তাড়াবে তোমাকে, ডাকবে না কেউ
পা বাড়ালে নেই পথ
পৃথিবী তোমাকে চায় না তেমন
ঘরেই যাপন যত আলাপন
হাত বাড়ালেই বন্ধুও নেই
মৃত্যুও ভারী, দীন;
ঈশ্বরদূত বিষ হয়ে ভাসে
ত্রাসের কাহিনী শ্বাসে প্রশ্বাসে
নরকের মাটি উত্তাল ছিল আগুন সমুদ্রে
সুস্থির মাটি, দু পায়ের জমি
সেপিয়ান্সের সেই এক ভূমি
প্রতিদিন প্রতি রাতে কেঁপে ওঠে দুঃসময়ের ঘায়ে!
ঘরেও প্রমাদ... ‘ঢুকতে দেব না’
দুপেয়ে জীবাণু যেন জহ্লাদ;
শ্মশানে অথবা খেয়া ঘাটে যাও
মানুষের থেকে মানুষ পালাও
এত ভয় এত স্বার্থচরিত জানা ছিল না তো আগে!
অতিমারী যুগে তবে কি নতুন ধর্ম রচিত হবে!
ঘর... পথ, পথ... ঘর... ঘুরে ঘুরে...
মানুষ অব-স্থান খুঁজে খুঁজে ফেরে...।


[Disease and Displacement নিয়ে লিখতে বসে মনে হল 'place' বিষয়টিই যেন হারিয়ে গেছে জীবন থেকে। আমরা স্থানচ্যূত হয়েছি। আক্ষরিক অর্থেই পায়ের তলার মাটি নেই। নইলে মানুষ ঘর থাকতেও শ্মশানে কিম্বা খোলা খেয়া ঘাটে আশ্রয় নেয়! স্থান থেকে স্থানান্তরের। পথ-প্রক্রিয়াও যেন হঠাৎ উধাও। পরিযায়ী মানুষের একটি পথ পরিক্রমা ছিল বটে কিন্তু সে তো চলার আনন্দে নয়! তাই খোঁজো নিজের সঠিক স্থান/ অব-স্থান 'lostracize' এবং 'stigmatize' অর্থাৎ বহিষ্কার আর তিরস্কার মনুষ্য ধর্মের নতুন সংযোজন। এই নৈতিক বিচ্যুতি আমাদের অবনমন ঘটিয়েছে, সেই অর্থেও অব-স্থান।]