Editorial/সম্পাদকীয়
সমাজ, ভাষা ও সংস্কৃতি
‘সমাজ, ভাষা ও সংস্কৃতি’র ই-ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যা প্রকাশ হলো। আমাদের কাউকে বলে দিতে হবে না, কী ভয়ংকর সময়ে এই গোষ্ঠী আর তার পত্রিকা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এখনকার তারিখ বলে দেবে ভবিষ্যতকে সবকিছু। আর বলবে এই পত্রিকার মধ্যে কয়েদ করা লেখাগুলো। বলবেই, কারণ এই গোষ্ঠীর আত্মপ্রকাশ শুধুমাত্র সাহিত্যের মূল্য ধরে রাখতে নয়, সামাজিকতার নতুন ক্রমপ্রতিষ্ঠা করতে নয়, সংস্কৃতির বিশেষ কোনো পর্যায় বা জঁর-এর প্রচার করতে নয়, উপমার জালে বস্তুতত্ত্বের প্রতিনিধিত্ব করতে নয়, এমনকি বস্তুভাবনার নামে নতুন তত্ত্বভাবনার রহস্য তৈরি করতে নয়। এখানে যা লেখা আছে তা সময়কে এবং জীবনকে সমকালীন নানা অস্ত্রে ফুটিয়ে তুলেছে।
ভারত দেশটার অন্দরমহল এখন প্রাচীনতা এবং তারই আধুনিকতার মূষলপর্বে উপনীত হয়েছে। অথচ সেটা ঘটছে একবিংশ শতকে। কী ঘটছে সেটা বুঝতে পারলেও অনেকেই মেলাতে পারছেন না, আদপে কেন ঘটছে। কোনো কিছুর বিশেষ উত্থান কোনো সময়ের সামগ্রিক পরিচায়ক হতে পারে না। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বিপুল সংখ্যায় রয়েই যায়, যারা পরিচয়ের কোনো বিশেষ সামগ্রিকতাকে বাধা দেবেই এবং বিশেষ স্থান খুঁজে সেখানে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেই। সেই সব মানুষের গোষ্ঠী এই সমাজ, ভাষা ও সংস্কৃতি।
এই গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে সমকালকে সমকাল দিয়ে বিধৃত করতে। তাই এখানে যা প্রকাশিত হয়েছে তার মধ্যে প্রতিবাদী ভাবনার নানা অলংকার নানাপটে ছড়িয়ে আছে, যেগুলিকে একসঙ্গে গাঁথার কোনো অর্থই নেই। এগুলির কোনো মতেই সামগ্রিক কোনো ছবি নয়, এক একটি পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য। এদের মিল একমাত্র প্রতিবাদী স্বাতন্ত্র্যে। ফলে এদের মধ্যে প্রতিবাদী ভূমিকা ছাড়া আপনি কী খুঁজবেন? এখানে বলে নেওয়া ভালো, প্রতিবাদী ভাবনা বলতে আমরা কী বুঝি? এ তো শুধু সমালোচনা নয়, যে কোনো প্রাতিষ্ঠানিকতার দম্ভের বিপরীতে নিজের স্বতন্ত্র মৌলিক অবস্থান যার সঙ্গে মেইনস্ট্রীম সংস্কৃতি বা আদর্শের কিছু পার্থক্য রয়েই যায়। এটাও তাই এক সামাজিকতা, একটা ভাষা’র ক্ষুদ্র চেহারা যার মধ্যে অনেক আলো নিজের পরিচয়ে ঠিকরে বেরোচ্ছে।
এটি ‘সমাজ, ভাষা ও সংস্কৃতি’-এর প্রথম সংস্করণ। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও অনেক মৌলিক লেখায় এই পত্রিকা সমৃদ্ধ হবে।