প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা - জুলাই, ২০২০
Short Stories/ছোটগল্প
লোকনাথ বিড়ি
সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়
অণুগল্প
লোকনাথ বিড়ির প্যাকেটটা মুখ বার করে আছে। কোনা ছিঁড়ে যত্ন করে বেড়িয়েছে একটা কি দুটো! তিনটে থেকে আবার ভারত বাংলাদেশ। রুগ্ন চেহারারা রোদ্দুর মাথায় দশটা দশে ঢুকে পড়ে এই শহরের গ্রাসে। মরা খেকো স্বপ্ন আর প্যাচ প্যাচে বাস্তবের ঠোক্কর খেতে খেতে সেতু পেড়িয়ে যায়। পকেট ফুটো হয়ে মুখবাড়ায় বাসভাড়া!ময়লা জমা কলারে নোনতা হওয়া ঘামের গন্ধ।কড়ি হয়ে যায় বুঝতেও পারেনা। ছেলে বেলায় রূপকথার কড়ির পাহাড় মনে হয়। অজান্তেই কপালের ঘামগুলো কড়ি হয়ে যায়। দস্তাবেজের পাহাড়ে বাবুদের চা জল এনে দিয়ে, ইলেক্ট্রিকের বিল দিয়ে, ছেলে মেয়েদের স্কুলের ব্যাগ, জলের বোতল কিনে দেবার স্বপ্ন দেখে। সে লোকটাকে তিল তিল করে চিনে নেওয়া, মেপে নেওয়া সিনেমার পোষ্টার। রাত্তিরে মাঝে মাঝে। এক হাজারে একশ টাকা জোটে। কোনটায় বশীকরণের যাদু। কোনটায় অক্ষমতার টোটকা। অন্ধকারে কানা গলির আলোটা কেউ জ্বালিয়ে দেয়। কমলকুমার জসীমুদ্দিনের দোকানে চা খায়। তারপর রাত্তিরে শেষ ট্রেনে বাড়ি। শহর কেবল গ্রাস করে, হাড় ভাঙায়। তারপর একদিন চট করে মরে যায়। শহর কেবল গ্রাস করে, হাড় ভাঙায়। না এটাই সব নয়, তার পরেও লুডোর বোর্ডে ছক্কা হাঁকায় ফুটপাত। শ্রম বিরতির পর।
জমিতে যাওয়ার আগে পান্তা-পেঁয়াজ
তোর কাছে একটা হবে রে ভাই? দেশলাই বাক্স দেখায় তর্জনী, মধ্যমা। নাড়ায় দু’বার। অন্ধকারে আলো ঠিক দ্বিগুণ হয় দুটো লাল জোনাকির মত। গরমের সন্ধ্যেয় দুটো ছায়া কথা বলছে। দূরে চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে বোষ্টম ধোপানীর মাঠ। সে মাঠটা রেললাইনে গিয়ে উঠেছে। একটা করে ট্রেন যাওয়া গুনে সময় মেপেছি বাঁ-হাতের ঘড়ির মত। গরমের সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি বিধ্বস্ত হয়।
আবার জমিতে যাবার আগে পান্তা, পেঁয়াজ। ঠা-ঠা রোদ্দুরে ক্ষেতমজুরি, তারপর পোষ্টার লেখা,পাশে থাকা, বামুনগাজী থেকে পীরতলা ঠেলা গাড়ি ঠেলা।চায়ের দোকান। গরমের সন্ধ্যায় রেডিওতে স্থানীয় সংবাদ।
#সময়।।
সময়ের বিক্ষুব্ধ সময়ে, উত্তাল স্রোতে গা ভাসিয়ে, পারস্পরিক টানাপোড়েন! অবিশ্বাস ছোটে চারিদিকে।
#অবিশ্বাস।।
যুক্তি তো লোপ পেয়েছে কবেই, পথে-ঘাটে মার খায় বিশ্বাসও, হারিয়ে গেছে, ফিকে। এখন অবিশ্বাস ছোটে চারিদিকে।
#স্তাবক।।
অবতীর্ণ হন স্তাবকের দল, জমিদারের বাতকম্ম কে যাঁরা এসেন্স ভাবেন, আর টিফিনে লুচির ফুলকো ছিঁড়ে, খেতে খেতে পলিটিক্সের আদ্যশ্রাদ্ধ করেন। বাজার সরকারের ভাড়া খাটে। ফেউ হয়ে যায়।
#উপরন্তু।।
২০১৭: এঁরাই পশ্চিমঙ্গের বুদ্ধিজীবী ছিলেন! মাল আর ডাঁটার মধ্যে ইহারা মালের বদলে মালের দিকে কিছুটা ঝুঁকেছিলেন।