প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা - জুলাই, ২০২০
Poems/কবিতা
অনেকগুলো কথা
আবীর চট্টোপাধ্যায়
সমকালের বিচার হোক সমকালের অস্ত্রে
অতীত শুধু রেফারেন্স হোক সময়ের চক্রে।
ইতিহাস যদি হয় সভাকবির বাক্সবন্দী কথা
সমকাল তবে হোক বিস্ফোরিত মুষ্ঠিবদ্ধ ব্যথা।
চমকানো ছাড়া বাকিটা দেখছি শুধুই রিডিং পড়া
ভাষার কাজ কি শুধু চাকরির পিছনে কড়া নাড়া?
সে আমায় ভুলিয়েছে কোন অজানার দুঃখে
তবু সত্তা বেঁচে থাকে কবিতারই সখ্যে।
অতীতবিশ্ব যায় কি দেখা শুধু বস্তু ভেবে?
জাত-পাতেরও অংক তখন বস্তু হয়ে ছুটবে।
বস্তুর চেয়ে অনেক বড়ো বস্তুটারই কল্প
ওটা যদি বিলীন হয়ও, থেকে যায় যে গল্প।
বস্তু যেমন, তেমনি তার গড়ে তোলা কল্পটাও
কল্প কিন্তু বস্তু ছেড়ে বানিয়ে তোলে গল্পটাও।
মানুষ যদি বস্তু হয় মগজ তবে বস্তুমেকার
মগজই লেখে ইতিহাস, মগজাস্ত্র তবে কার?
ঘটনা যদি কারণ হয় ইতিহাস তবে বর্ণিত
কারণ যদি অর্থক হয়, বর্ণিত তবে অর্থিত।
সেই ইতিহাস পাকেচক্রে যখন হয় কারণ
প্রতিশোধের দুঃখনদী মানবে না তো বারণ।
প্রতিশোধের কান্ডারীদের টিকি রয়েছে বাঁধা
ক্ষমতারই গোপন সুতোয় চলছে গলা সাধা।
একদিকে জাতের অংক অন্যদিকে সব গোষ্ঠী
দলেরই আখড়ায় চলে ভাগাভাগির কুস্তি।
ফলে,
ইতিহাস যদি শুধুই মানে দল আর গোষ্ঠী
কীকরে আর জায়গা পাবে সাধারণের কুষ্ঠি।
যেসব মানুষ পায়নি জায়গা ইতিহাসের অন্দরে
তারাই আজ চলছে দেখ রাজার সড়ক পথধরে।
ত্রাণই এখন ভরসা তাদের, ঝড়-ভাঙ্গনে হারিয়ে ভিটে
খালি গায়ের ছবি ওঠে সভ্যতারই পাশটিতে।
এদের কি সব ধরতে হবে ইতিহাসের বস্তুটা?
বস্তুবাদের ইতিহাসটাই হবে তখন সভ্যতা।
তাহলে এরা লিখবে কবে নিজের ইতিহাস?
নিজের কথা নিজের ভাব নিজের পাতিহাঁস।
কবে এরা উলটে দেবে ইতিহাসের ব্যাখ্যা
শাসনের সীমা ছেড়ে সমকালের লেখ্যা।
যেমন বলা সবাই মিলে মুখোশ নিয়েছি পরে
ক’মাস পরে খুলবো কখন কে বলবে ওরে।
তোদের যাদের মুখোশ সয়, থাক না ভাই পরে
কিছু লোকের মুখোশটা তো সহ্য নাও হতে পারে।
সমাজ-টমাজ দিয়েছ ঘেঁটে সবই প্ল্যান করে
ভূগোলে পৃথক করে শেষে অংকে দিচ্ছ মেরে।
তাতেও দেখি জীবনে সবার ছাড় তো বিশেষ নাই
মরার পরেও লাশটি হয়ে ধাপার মাঠে যাই।
বন্দী আমি বন্দী এদেশ বন্দী পোশাক, খাদ্য
ঠিক সময়েই বাজল দেখ লড়াইয়ের বাদ্য।
একদিকে জ্যোতিষভক্ত অন্যদিকে পা-চাটা
বলতে পারো ক্যামনে হবে আমার বাঁচাটা।