Society, Language and Culture
সমাজ, ভাষা ও সংস্কৃতি

(A Multidisciplinary Peer-Reviewed Journal)
A Unit of Society, Language and Culture Trust
ISSN: 2583-0341

প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা - জুলাই, ২০২০

Poems/কবিতা

বিবাহ ও নারীর দায়

পিয়ালী হালদার


শুনুন শুনুন সুধী জন, শুনুন দিয়া মন,
অতিমারীর মাঝে সে এক হল আগমন।
বেশ তো ছিলেন বাড়ির মানুষ, প্রযুক্তির ঐ ট্রেন্ড,
ওয়েবসিরিজ আর ফেসবুকেতেই কাটত দিনের এন্ড।
তার মাঝেতেই রান্না-বাড়া, রকমারি স্বাদ,
কোনোটা যদি ময়রা মুদি, কোনোটা আবার গ্র্যান্ড।
সেসব নিয়েই বেশ ছিল এই পাঁচ কুড়ি দিনকাল,
হঠাৎ করে হাজির হল শাঁখা-সিঁদুরের চাল।
লকডাউনে এমনিতেই ছাই বিয়ে-টিয়ে সব গোল,
তারই মাঝে বিধান এলো শাঁখা-সিঁদুরের রোল।
গুয়াহাটি হাইকোর্টই যে জানিয়ে দিলেন সাফ,
শাঁখা-সিঁদুর না পরলে, এ কেমন ‘বৌ’ বাপ!
হিন্দু মতে বিবাহ মানেই কপাল জোড়া সিঁদুর,
শাঁখা-পলা-আলতা-টিপে তবেই কিনা বধু।
এই বিধানেই ফেসবুকেতে উঠল সে এক ঝড়,
একের পর এক রোল উঠল, “দল বাঁধি সব চল”।
কেউ বলেছেন “শাঁখা-সিঁদুর ছুঁই না তিরিশ বছর”,
“না না বাবা, শ্বশুরবাড়ি ভালোই আমার, নেই কোন জারি-জোর”।
এসব দেখে দুষ্টু মনে উঠল কয়েক বাত,
সিঁদুর খেলার ফেবু ডিপির দু’সেকেন্ডে লাইক, তাও তো ছিল গোটা ষাট।
হাতে শাঁখা-পলা-নোয়া, কপাল জোড়া টিপ,
সধবা নারীর সেদিন নাকি উদযাপনের দিন।
সেসব না-হয় বাদই দিলাম, আছে আরো কিছু,
এখন আবার কাপল রিং-ই, বিয়ের বাজার হেব্বি উঁচু।
অনামিকার ধমনী নাকি সোজা হৃদয় ছোঁয়,
এক্ষেত্রে সেই বিবাহের চিহ্ন সমান-সমান হয়।
মঙ্গলসূত্রও বাদ যায় না, সপ্তপদীর ঘোর,
সাত জনমের বাঁধন কাটায়, দেখি কার এত জোর!
এদিক সেদিক নানান গেরোয় বিয়ে হয় ধুমধাম,
পিঞ্জরের রং বদলালেও, দেওয়াল সেই চার।
বিবাহ, স্বামী, সন্ততি আর শ্বশুরকুলের দায়,
মা মেয়েরা এসব করেই দিন কাল গুনে যায়,
নারীর কথা, স্বাধীনতা, আর ক্ষমতায়নের ঘোর,
আসল নারী ধুকছে আজও, কবে আসবে রাঙা ভোর?